মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৪২ অপরাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
গ্যাস-বিদ্যুৎ ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানো এবং ১০ দফা দাবিতে আজ শনিবার সব বিভাগীয় সদরসহ কুমিল্লা ও ফরিদপুর শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে বিএনপি। ঢাকায় একই কর্মসূচি পালন করবে বিএনপির মিত্রদলগুলো। এটি যুগপৎ আন্দোলনের পঞ্চম কর্মসূচি। আজকের কর্মসূচি থেকে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা আসতে পারে। মানবপ্রাচীর কর্মসূচির কথাও চিন্তা করছে দলটি।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘আমরা ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি দিচ্ছি। রমজানের আগে তো কর্মসূচি আরও আসবে। বড় ধরনের কর্মসূচিও আসার সম্ভাবনা রয়েছে।’ তাছাড়া যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচির বাইরে নিজ নিজ দলের কিংবা জোটের নিজস্ব কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকার পরামর্শ দিয়েছে বিএনপি তাদের মিত্রদের। ঢাকায় এ ধরনের আরও কর্মসূচি ঘোষণা করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। এ ছাড়া গণতন্ত্র মঞ্চ এরই মধ্যে পৃথক কর্মসূচি দিয়েছে।
যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র দলগুলোর নেতারা বলেছেন, রমজানের আগে বড় কয়েকটি কর্মসূচি দিয়ে রাজনীতির মাঠ গরম করতে চান তারা। এ জন্য যুগপৎ আন্দোলনের মিত্র জেট ও দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক যে বৈঠক হচ্ছে তাতে বড় কর্মসূচি কী ধরনের হতে পারে তা নিয়ে মিত্রদের মতামত নিচ্ছে বিএনপি। এই দলের একটি সূত্র জানিয়েছে, রমজানের আগে দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান ধর্মঘটসহ এ ধরনের বেশ কয়েকটি কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
জোট পরিচালনা পরিষদের সদস্য আকবর খান জানান, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি মিরপুর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত লিফলেট বিতরণ ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে পথসভার কর্মসূচি রয়েছে। গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক দল গণঅধিকার পরিষদ বিদ্যুৎ-গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার দাবিতে জেলায় জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। এ ছাড়া দলটি বিদ্যুতের অস্বাভাবিক দামের প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও হারিকেন মিছিল করেছে।
এদিকে আজকের বিভাগীয় সমাবেশ নিয়ে বিএনপি মিডিয়া সেল সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানী ঢাকায় দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ হবে। এতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেবেন। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ কেন্দ্রীয় নেতারা অন্য বিভাগীয় সদরের সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন কুমিল্লায়, মির্জা আব্বাস রাজশাহীতে, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় খুলনায়, ড. আবদুল মঈন খান বরিশালে, নজরুল ইসলাম খান চট্টগ্রামে, সেলিমা রহমান সিলেটে, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ময়মনসিংহে, ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে মো. শাহজাহান রংপুরে, বরকতউল্লা বুলু ফরিদপুরের সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
বিভাগীয় কর্মসূচি পালনের সময় বিএনপি ফরিদপুর এবং কুমিল্লায়ও একই কর্মসূচি পালন করে। বিজ্ঞপ্তিতে দলটি জানিয়েছে, দলের ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য, যুগ্ম মহাসচিবরা এসব সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সম্পাদক, সহ-সম্পাদক, সদস্য, সাবেক সংসদ সদস্যরা নিজ নিজ বিভাগে ও জেলার সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বিভাগীয় সাংগঠনিক এবং সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকরা নিজ নিজ এলাকার সমাবেশে সমন্বয়কারী ও সমন্বয় সহযোগী হিসেবে সার্বিক সমন্বয় ও প্রস্তুতি তদারক করছেন, প্রস্তুতিমূলক বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন এবং তারা সমাবেশে অংশগ্রহণ করবেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে ১০ দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনকে আরও বেগবান করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিএনপির মিত্র দলগুলো গতকাল শুক্রবার পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, গণতন্ত্র মঞ্চ বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে, ১২ দলীয় জোট বেলা ১১টায় বিজয়নগর পানির ট্যাংক সংলগ্ন এলাকায়, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট পুরানা পল্টন আলরাজী কমপ্লেক্সের সামনে, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি বিকাল ৪টায় আরামবাগে দলীয় অফিসের সামনের সড়কে, এলডিপি বেলা ৩টায় কারওয়ান বাজার এফডিসি সংলগ্ন দলীয় কার্যালয়ের সামনে এবং গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যর বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করার কথা রয়েছে। ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা জানান, তাদের জোট ঢাকা ছাড়া সিলেট ও রংপুর বিভাগীয় সদরে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে।
ভয়েস/জেইউ।